সরিষার হলুদ ফুলে রঙিন ফসলি মাঠ

নিজস্ব প্রতিনিধি (নওগাঁ)

অগ্রহায়ণের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে সরিষার ফুল। যেদিকে তাকাই শুধুই হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকেরা।উত্তরাঞ্চলের খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত জেলা নওগাঁ। এখানকার উৎপাদিত চালের সুনাম রয়েছে।

কিন্তু লাগাতার ধানের দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ছুটছেন লাভজনক ফসল চাষের দিকে। গত বছর স্থানীয় বাজারগুলোতে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এবার সরিষা চাষে অধিক আগ্রহী হয়েছেন। বর্তমানে রাণীনগরের মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলের শোভা পাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় দুই হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগাম জাতের সরিষায় ফুল আসাও শুরু করেছে।

এমন লাভজনক তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি সরিষা চাষের মৌসুমে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের দুই হাজার দুইশ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সব সময় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের সরিষা চাষী বেলাল হোসেন বলেন, কম খরচ, কম পরিশ্রম আর কম সময়ে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে ৬-৮ মণ হারে সরিষা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ সরিষা চার হাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই আমিও আশাবাদী যে এবার সরিষা চাষ করে আমার মতো কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক এক ইঞ্চি জমিও যেন পরে না থাকে সেজন্য উপজেলার সকল কৃষককে আমরা জমি ফেলে না রেখে বিভিন্ন লাভজনক ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ করে চলেছি। এর ধারাবাহিকতায় তেল জাতীয় ফসল সরিষা চাষে এবার সর্বাধিক কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন…প্রিমিয়ার সিমেন্ট নতুন নামে লেনদেন করবে

তিনি বলেন, গত বছর স্থানীয় বাজারগুলোতে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা এবার সরিষা চাষে অধিক আগ্রহী হয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সরিষার আবাদ করছেন। আবার সরিষা চাষ করলে জমির উর্বরতা শক্তিও বৃদ্ধি পায়। আর সরিষা তেলের পর পরই বোরো ধান রোপন করা সম্ভব। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রত্যেক সরিষা চাষি অধিক লাভবান হবেন বলে আমি শতভাগ আশাবাদী।

ইবাংলা/জেএন/২৩ নভেম্বর ২০২২

হলুদ ফুলে রঙিন ফসলি মাঠ