ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) রাতভর ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় টানা ছয়দিনের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল ৫০০৯ নং স্মারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এ প্রতিবেদনটি জমা দেন।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও একাডেমিক শাখার উপ-রেজিষ্টার মো: আলীবদ্দীন খান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের নিকট প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন।
এবিষয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব আলীবদ্দীন খান জানান, আমরা বিভিন্ন তথ্য প্রমাণাদি যাচাই বাছাই করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছি। এবং আজ তা রেজিস্টার মহোদয়ের কাছে জমা দিয়েছি।
আরও পড়ুন…ডাক্তারের বর্ষপূর্তি আনুষ্ঠানিকতায় রোগীদের ভোগান্তি
এই প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ছয় কর্ম দিবসেই জমা দিয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে পাঠাবো। সুপ্রিম কোর্ট যা নির্দেশনা দিবেন তা আমরা এক্সিকিউট করবো।
রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও শেখ হাসিনা হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাক্ষাৎকার এবং তথ্য-উপাত্ত নিয়ে পর্যালোচনা শেষ হয়েছে। সকাল ১০টার দিকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল ৫০০৯নং স্মারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে ওই প্রতিবেদন জমা দেন।
এর আগে ছাত্রী নির্যাতনের নানা দিক খতিয়ে দেখতে শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তথ্য-উপাত্ত নিয়ে পর্যালোচনায় বসে তদন্ত কমিটি। আইন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রেবা মণ্ডলের কক্ষে কমিটির সদস্যদের একত্রিত হওয়ার কথা থাকলেও, সেদিন তারা অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মার কক্ষে বসেন।
পর্যালোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন তদন্ত কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. দেবাশীষ শর্মা, প্রফেসর ড. ইয়াসমিন আরা সাথী, সদস্য ও সহকারী প্রক্টর প্রফেসর ড. মুর্শিদ আলম ও সদস্যসচিব একাডেমিক শাখার উপরেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান।
উল্লেখ্য, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় নবীন ওই ছাত্রীকে। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।
আরও পড়ুন…মা-মেয়েকে পিলারে বেঁধে টিকটক!
সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা ওই ছাত্রীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয় পেয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী।
র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দফতর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের নির্দেশে ক্যাম্পাস ছাড়েন অভিযুক্তরা।
ইবাংলা/টিএইচকে