ঐতিহাসিক শারজাহ কিংবা আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। দুটি ভেন্যুই হতাশ করেছে বাংলাদেশকে। জয়ের কাব্যরচনার পরিবর্তে লেখা হয়েছে হারের শোকগাঁথা। এবার বাংলাদেশ নামবে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। যাদের বিপক্ষে মাস দুয়েক আগে ঘরের মাঠে দাপুটে সিরিজ জয়ের স্মৃতি এখনো তরতাজা। যদিও এসব অঙ্ক কষে এখন লাভ নেই! বিশ্বকাপ যাত্রার এই কিছু দিনে সব ওলটপালট হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নামবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। অস্ট্রেলিয়ার জন্য এই ম্যাচটি সেমিফাইনালের পথে আরও একধাপ এগোনোর রাস্তা হলেও বাংলাদেশের জন্য শুধু নিয়মরক্ষার। তবে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার জন্য জয়টা প্রয়োজন মাহমুদউল্লাহর দলের।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ৯ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছে। ঘরের মাঠে ৫ ম্যাচের সিরিজের আগে চারটি ম্যাচই ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত আসরের বিশ্বকাপে চারবারের দেখায় সববারই হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ৫ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ জিতেছিল ৪-১ ব্যবধানে। ৯ ম্যাচের সমীকরণে ৫-৪ এ এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই।
সুপার টুয়েলভে টানা ৪ ম্যাচ হেরে ইতিমধ্যে বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায় হয়ে গেছে। অজিদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জিতে জয়ের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে চান লঙ্কান এই কিংবদন্তী স্পিনার, ‘পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের অবশ্যই শক্তভাবে ফিরতে হবে। এখনো আমাদের একটি ম্যাচ আছে। এই হিসেবে আমাদের লড়াকু বা জয়ের মানসিকতাটা ধরে রাখতে হবে এবং জয়ের আত্মবিশ্বাসটা ফেরাতে হবে। তো এই জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেটের এগিয়ে চলার ব্যাপারে আমাদের ভাবতে হবে।
জিততে পারলে পরের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সরাসরি খেলার সুযোগও হতে পারে। ফাইনালের পরদিন র্যাংকিংয়ের সেরা ৮ দল সুযোগ পাবে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার। বাংলাদেশ আছে ৯ নম্বরে। সমান ২৩৪ রেটিং হলেও মাত্র দশমিক ৫ পয়েন্ট এগিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ নম্বরে। ২৩০ পয়েন্ট নিয়ে শ্রীলঙ্কা ১০ নম্বরে । আর ২৩৫ পয়েন্ট নিয়ে সাতে আফগানিস্তান। বাংলাদেশ অজিদের বিপক্ষে জিততে পারলে সরাসরি তাদের মাটিতে খেলার সুযোগ পেতে পারে। তবে সঙ্গে প্রার্থনা করতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি হারের।
কিছুদিন আগে সিরিজ হারলেও এখন যে প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন সেটি ভালো করেই জানে অস্ট্রেলিয়া। তারাও ছেড়ে কথা বলবে না। তাইতো অ্যাস্টন অ্যাগার বলেই দিলেন, ‘বাংলাদেশের মতো ওই কন্ডিশনে আমাদের অনেকে সম্ভবত প্রথমবার খেলেছিল। আমরা বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম, সত্যি কথা বলতে ওই কন্ডিশনে বাংলাদেশ অসাধারণ খেলেছিল। তারা ঘরের মাঠে ভালো খেলেছে এটা আমাদের কাছে আশ্চর্যের কিছু নয়, কিন্তু এখন ভিন্ন ব্যাপার। আমাদের দল এখন আলাদা এবং উইকেট বাংলাদেশের মতো আচরণ করছে না। আমরা দেখব কী হয়। আমাদের জিততে হবে এবং জেতার জন্যই ছেলেরা খেলবে। এটা হবে দারুণ ম্যাচ।’
সবশেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ একাদশ নির্বাচনে ভুল করেছিল। উইকেটের আচরণ বুঝে নিতে পারেনি সেরা একাদশ। এবার অজিদের বিপক্ষে বাংলাদেশ নামতে পারে এক পরিবর্তন নিয়ে। পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে দেখা যেতে পারে একাদশে। বাদ পড়তে পারেন শরিফুল ইসলাম। আর তিন পেসার যদি খেলানো হয় তাহলে নাসুম আহমেদ কিংবা শামীম হোসেন বাদ পড়তে পারেন।
বাংলাদেশের সামনে জয়ে ফেরার শেষ সুযোগ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা কি পারবেন জয় নিয়ে দেশে ফিরতে? নাকি একেবারে খালি হাতেই ঢাকার বিমান ধরবেন?
ইবাংলা/টিআর/০৩ নভেম্বর, ২০২১