ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ফাঁদে পা দিয়েছে ইরান। গত দুই মাস ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার হুমকি দিয়ে আসলেও, তেহরান কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে ইসরায়েল লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে, যা ইরানের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
গত এপ্রিলের পর প্রথম অক্টোবর, মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো ইরানের মাটি থেকে ইসরায়েলে হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যা ইরানের জন্য একটি সাফল্য হলেও, ইসরায়েল এ জন্য প্রস্তুত ছিল। ইসরায়েলের কৌশলগত হামলার কারণে তারা আগেই প্রস্তুতি নিয়েছিল এবং এ ঘটনার ফলে নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে।
ইসরায়েল প্রথমে যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট করে লেবাননে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে এবং পরে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সদরদপ্তরকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত ওই সদরদপ্তরটি বাংকার বাস্টার বোমায় ধ্বংস করা হয়, যেখানে হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন। এর ফলে ইরান পাল্টা হামলা চালাতে বাধ্য হয়, যা লেবানন, ইরাক এবং ইয়েমেন থেকে সংগঠিত হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখন ইসরায়েলের হাতে বল রয়েছে। ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে অনুমতি দেয়নি। বরং, ওয়াশিংটন ইরানের অর্থনীতি ধ্বংসের পরিকল্পনায় আছে এবং ইসরায়েলকে ইরানের তেল রপ্তানি টার্মিনালে হামলা করতে উৎসাহিত করতে পারে।
নেতানিয়াহুর কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, ইসরায়েল গোপনে ইরানের পরমাণু স্থাপনার দিকে নজর রাখতে পারে। এতে ইরানের সামরিক ও অর্থনৈতিক উভয় ক্ষেত্রে বড় ধাক্কা লাগবে, যা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে, সংঘাতের এই অবসান ঘটাতে হলে সকল পক্ষের পক্ষ থেকে সংযম প্রদর্শন করা প্রয়োজন। সংঘাতের এই চক্র যদি অব্যাহত থাকে, তবে তা শুধু অঞ্চলের জন্য নয়, বরং বিশ্বব্যাপী স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকির কারণ হতে পারে।