সোনালি আঁশে স্বপ্ন দেখাচ্ছে ‘তুলিকা’

ফারজানা ইয়াসমিন, ঢাকা

নিজে কিছু করার তাগিদে, নিশ্চিত আয়ের চাকরি ছেড়ে, সোনালী আঁশ নিয়ে কাজ শুরু করেন ইশরাত জাহান চৌধুরী। এক লাখ টাকায় শুরু করা ব্যবসা থেকে এখন মাসে তার আয় গড়ে তিন লাখ টাকা। তার প্রতিষ্ঠানে তৈরি নানা পাটপণ্য পাড়ি জমাচ্ছে ইউরোপের অনেক দেশে।

সুইঁ সুতা আর পাটের মেলবন্ধনে ইশরাত জাহানের কারখানায় একের পর এক পণ্য তৈরি হচ্ছে। সকাল থেকে কর্মীদের নিঃশ্বাস ফেলারও অবসর নেই। ‘তুলিকা’ নামে পাটপণ্যের এই প্রতিষ্ঠানটি সবেই বড় কারখানায় স্থানান্তর হয়েছে। পাঁচ বছর আগে মাত্র এক লাখ টাকায় এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ইশরাত জাহান।

আরও পড়ুন : পাটের ন্যাপকিনে পুরস্কৃত বিজ্ঞানী ফারহানা

নিজের গয়না বিক্রিসহ মাত্র ৫০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ইশরাত। লক্ষ্য ছিলো বিশ্বের দরবারে বাংলার সোনালি আঁশ পাটকে পরিচিত করাবেন। বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘তুলিকা’ থেকে ইতালি, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, বেলজিয়াম ও সুইডেনে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী পাটের তৈরি ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে। হচ্ছে কর্মসংস্থানও ।

ব্যবসা শুরুর পর পদে পদে হোচঁট খেয়েছেন। তিনটি সেলাই মেশিন নিয়ে কোন কর্মী ছাড়াই কাজ শুরু করেন। লোকসানও গুণতে হয় সে সময়। তারপরও দমে যাননি।

ইশরাত জাহান বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করতেন। মেয়ের জন্মের পর চাকরিটা ছাড়তে হয়। তবে নিজে একটি কিছু করতে চাইছিলেন। সেই চিন্তা থেকেই তুলিকার যাত্রা। কাজ শুরুর আগে পাট বিষয়ে পড়াশোনা করেন। প্রশিক্ষণ নেন। হুট করে কাজ শুরু করার ঝুঁকি নিতে চাননি তিনি।

আরও পড়ুন : যে নারীরা উদ্যোক্তাদের জন্য অনুকরণীয়

তরুণ এই উদ্যোক্তার মতে, দেশে ব্যবসার পরিবেশ এখনো বড় উদ্যোক্তাবান্ধব। প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে হোঁচট খাচ্ছে ক্ষুদেরা। মেলে না সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও।

পাট ও পাটজাত পণ্যকে নিয়ে মনের ভেতর বিশাল স্বপ্ন লালন করেন ইশরাত। বলছেন, সুযোগ পেলে এই দেশ আর পণ্যকে বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে দিতে চান। তার মতে, সোনালি আঁশকে সোনালি দিনের হাতিয়ার করে তুলতে বাংলাদেশকে এখনো বহুদূর যেতে হবে।

Contact Us