একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাকে বাইরের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পরিবারের সদস্যদের সচেষ্ট হতে হয়। দীর্ঘ দশ মাস মাতৃগর্ভে থাকার পর এ সময় শিশুর প্রতি যথাযথ যত্ন তাকে সহজে নতুন অভিজ্ঞতার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে। শিশুর জন্মের পর বয়স যা-ই হোক, তাকে নানা ধরনের ব্যায়াম করানো প্রয়োজন। এটি শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
অতিশৈশবে কিছু ব্যায়াম তার দ্রুত শারীরিক শক্তি ফিরে পেতে এবং অঙ্গ সঞ্চালনে নিয়ন্ত্রণ পেতে সাহায্য করে। স্বাভাবিকভাবেই এসব ব্যায়ামের কোনোটাই বেশি ভারী হবে না, যেহেতু এ সময় শিশুর শরীর খুব নরম ও সংবেদনশীল থাকে। তাই এক থেকে ছয় মাস সময় পর্যন্ত আপনার সন্তানকে কী ধরনের ব্যায়াম করাতে পারেন, চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ।
হাতের গ্রিপ শেখানো
শিশুকে তার দেহের ক্ষুদ্র অঙ্গ সঞ্চালনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করানো যেতে পারে, যাতে বিভিন্ন ছোট ছোট জিনিস হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরতে পারে। কিছু ব্যায়াম শিশুর হাতের গ্রিপ মজবুত করে। শিশুকে গ্রিপ শেখানোর জন্য আপনার হাতের আঙুল শিশুর হাতের মুঠোয় রাখুন এবং অন্য হাতে শিশুর হাতের মুঠো চেপে রাখুন। এভাবে কিছুক্ষণ রেখে ছেড়ে দিন। এতে ধীরে ধীরে শিশুর হাতের গ্রিপ শক্ত হবে। সে যে কোনো জিনিস হাতের আঙুল ব্যবহার করে শক্ত করে ধরতে শিখবে।
বাইসাইকেল
শিশুর জন্য মজার একটি ব্যায়ামের নাম বাইসাইকেল। শিশুর তিন থেকে চার মাস বয়স থেকেই এই ব্যায়াম করাতে পারেন। শিশুকে শুইয়ে দিয়ে তার পা দুটি আপনার হাতে নিন। তারপর তার পা দুটি ধীরে ধীরে সাইকেল চালানোর মতো করে ঘোরাতে থাকুন। এটি শিশুর পা এবং নিম্নাঙ্গের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে এই ব্যায়াম বেশি সময় ধরে না করাই ভালো। এ ব্যায়ামটিতে শিশু বেশ আনন্দ পায় এবং একসময় আপনার সাহায্য ছাড়াই সে একা একা এভাবে পা নাড়িয়ে খেলবে।
চেস্টক্রস
চেস্টক্রস শিশুর দুই বাহুর শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শিশুকে দিনের যে কোনো সময় এ ব্যায়াম করানো যেতে পারে। গোসলের পর গায়ে তেল বা লোশন মাখার সময় এই ব্যায়াম করানো যেতে পারে। আবার খেলার ছলে দিনের অন্য যে কোনো সময়ও এটি করা যেতে পারে। এই ব্যায়ামের জন্য শিশুকে বিছানায় চিত করে শুইয়ে নিন। এরপর তার হাতের মুঠোয় আপনার আঙুল রাখুন। শিশু যখন শক্ত করে আপনার আঙুল ধরবে, তখন তার দুই হাত প্রসারিত করে নিন।
এবার ডান হাত বাম বুকের দিকে স্পর্শ করিয়ে দিন। পর্যায়ক্রমে বাম হাত ডান বুকের দিকে স্পর্শ করাতে হবে। ব্যায়ামটি করানোর সময় সাবধানতার সঙ্গে আস্তে আস্তে করতে হবে, যাতে শিশু কোনোভাবেই ব্যথা না পায়। এভাবে এই ব্যায়ামটি শিশুকে প্রতিদিন পাঁচবার করাতে পারেন। আবার দুই হাত মাথা পর্যন্ত নিয়েও ব্যায়ামটি করাতে পারেন। শিশু আঙুল না ধরলে আপনার হাতের মুঠোয় তার হাত রেখে ব্যায়ামটি করাতে পারেন।
ইবাংলা / টিপি/ ৬ ডিসেম্বর, ২০২১