খুব যত্ন করে লম্বা সময় ধরে মেকআপ নিয়েছেন; কিন্তু পার্টিতে পৌঁছানোর আগেই মেকআপ গলতে শুরু করেছে। অথবা ফেটে গিয়ে সূক্ষ্ম রেখা দেখা দিয়েছে। গেল তো মেজাজ বিগড়ে! হলোত পণ্ডশ্রম! অনেক ভেবেও এর কারণ উদ্ধার করতে পারেননি। এরই মধ্যে বদলেছেন মেকাপের হরেক রকম ব্রান্ড। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
আসলে একটি ভালো মেকওভারের পূর্বশর্তই হচ্ছে বেস মেকআপ। আর ভালো বেস মেকআপ করার জন্য প্রাইমারের কোনো বিকল্প নেই। প্রাইমার মেকআপের ক্ষেত্রে এটি ব্রিজের মতো কাজ করে। স্কিন কেয়ারের ধাপগুলোর সঙ্গে মেকআপের একটি যোগসূত্র তৈরি করে এটি। মেকআপের আগে ত্বকের ওপর একটি সুরক্ষা পরত হিসেবে কাজ করে এবং প্রসাধনগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে সুরক্ষা প্রদান করে।
কেন ব্যবহার করবেন : স্কিনকে মেকআপের জন্য প্রস্তুত করে নিতেই মূলত প্রাইমার ব্যবহার করা হয়। এটি ত্বকের সঙ্গে মেকআপকে ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে একটি মসৃণ ভাব ফুটিয়ে তোলে। ত্বকে অ্যান্টি এজিং হিসেবেও কাজ করবে এটি। ত্বকের পোরগুলোকে ছোট করে। মেকআপকে দেখতে ন্যাচারাল মনে হয়।
এ ছাড়া প্রাইমার মুখের অবাঞ্ছিত দাগগুলোকে লুকাতে সাহায্য করে। মেকআপে প্রাইমারের ব্যবহারে ত্বকের পোরগুলোকে ছোট করে দেয়, ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নেয়, ত্বককে দেখতে মসৃণ করে। সাধারণত ফাউন্ডেশন, লিপস্টিক, মাশকারা, আইশেডো এমনকি নেইল পলিশ লাগানোর আগে প্রাইমার ব্যবহার করা হয়।
অনেক সময় দেখা যায়, মেকআপ করার পরে মনে হয় মেকআপটি আলগা হয়ে আছে; যা পুরো সাজটাকে একেবারে বেমানান করে দেয়। প্রাইমারের মধ্যে থাকা প্রয়োজনীয় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং মিনারেল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, প্রয়োজনীয় নিউট্রিশন জোগায়।
কেনার আগে ত্বকের ধরন বুঝে প্রাইমার নির্বাচন করতে পারেন। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরনের প্রাইমার পাওয়া যায়। যেমন- ওয়াটার বেজ প্রাইমার, মিনারেল বেজ, ন্যাচারাল, অয়েল ফ্রি, সুগন্ধি ফ্রি ইত্যাদি। শুধু মুখেই নয়- চোখের সাজ, ঠোঁট এবং নখের সাজের ক্ষেত্রেও প্রাইমার ব্যবহার করা হয়।
জেনে নিন এর উপাদানগুলোর কার্যকারিতা
- সিলিকন : সিলিকন ত্বকে প্রতিফলিত আলো নিয়ন্ত্রণ করে।
- রেটিনাল পালমিটেট : এটি ত্বকের ফেটে যাওয়া ভাব দূর করে এবং ত্বককে কোমল করে।
- প্রপিলেন গ্লিসল : ত্বককে প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারাইজার সরবরাহ করে।
- ওয়াক্স অ্যান্ড পলিমার : মেকআপকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করে।
- সাইক্লোমেথিকন : এটি ত্বকের সিলিকন গ্রিজ বা চর্বি জাতীয় পদার্থ নিষ্কাশনে সাহায্য করে।
- জিঙ্ক অক্সাইড : ত্বকের বাইরের ইউভিএ বা ইউভিবি রশ্মি শোষণ করে ফুল কাভারেজ দিতে সহায়তা করে।
- টাইটেনিয়াম ডাইঅক্সাইড : ত্বককে বাইরের ক্ষতিকর ইউভিএ বা ইউভিবি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
কখন ব্যবহার করবেন : প্রাইমার মেকআপের কোন্ ধাপে এসে ব্যবহার করতে হয়, সেটি জানতে হবে সবার আগে। স্কিন কেয়ারের ধাপগুলো অর্থাৎ ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিংয়ের পর প্রাইমার প্রয়োগ করতে হয়। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ২/৩ মিনিট পর আঙুলের ডগা দিয়ে প্রাইমার লাগিয়ে নিন এবং পুরো ত্বকে ভালো করে মিশিয়ে আরো মিনিট খানেক পর মেকআপ করুন। এই গরমে দীর্ঘ সময় মেকআপ ধরে রাখার জাদুটা লক্ষ্য করুন নিজেই।
ইবাংলা / টিপি/ ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১