দুটি মানুষের মধ্যে নতুন সম্পর্কের সূচনা হয় বিয়ের মাধ্যমে। একে অপরের প্রতি বিশ্বাস রেখে দুজন মানুষ স্বপ্ন দেখেন জীবনের বাকি পথটুকু পাড়ি দেয়ার। জীবনের এই নতুন অধ্যায় শুরু হওয়ার সময়টুকু সবাই স্মরণীয় করে রাখতে চান। সেই ইচ্ছা পূরণেই দম্পতি চলে যান হানিমুন বা মধুচন্দ্রিমায়। হানিমুনের মধুর দিনগুলো দুজন দুজনের আরো কাছে আসতে এবং বুঝতে সাহায্য করে। এক কথায়, একে অপরকে জেনে নেয়ার এটাই সুযোগ!
বিয়ের মতোই হানিমুন নিয়েও থাকে নানা পরিকল্পনা। কারণ বিয়ের পর হয়তো অনেকবার অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়ানো হবে কিন্তু হানিমুন হবে একবারই। হানিমুনে কোথায় যাওয়া হবে, কোথায় থাকবে, বাজেট কত হবে সেসব নিয়ে চলে পরিকল্পনা। তবে এত আয়োজনের হানিমুনও মাটি হয়ে যেতে পারে যদি কিছু বিষয়ে খেয়াল না রাখেন।
কিছু সাধারণ ভুল হয়তো আপনি করে ফেলতে পারেন, যার ফলে হানিমুনের আনন্দ আর উপভোগ্য মনে হবে না। এখন বিয়ের মৌসুম। বিয়ের পরে হানিমুনে যাওয়ার পরিকল্পনা অবশ্যই থাকে। তাই এখনই জেনে নিন হানিমুনে কোন ভুলগুলো করা যাবে না-
ভুল ঋতু বেছে নেয়া: হানিমুনে যাওয়ার জন্য সঠিক ঋতু বেছে নেয়ার বিকল্প নেই। জীবনের এই বিশেষ সময়কে স্মরণীয় করে রাখতে হলে অবশ্যই ঋতু ও আবহাওয়ার দিকে খেয়াল রাখবেন। খুব বেশি শীতে পাহাড়ি কোনো অঞ্চলে আটকে গেলে বা তুমুল বর্ষার মৌসুমে সমুদ্র দেখতে গেলে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দই পাবেন না। তাই আগে ঋতু ও আবহাওয়ার দিকে খেয়াল রাখুন। এরপর হানিমুনের জায়গা নির্বাচন করুন।
শরীরের প্রতি উদাসীন: বিয়ের সময়ে মানসিকভাবেও অনেক চাপ সামলাতে হয় বর-কনেকে। সবকিছু সামলে নিজের শরীরের দিকে খেয়াল রাখা সত্যি মুশকিল হয়ে পড়ে। এসময় খাবার-দাবারেও নানা অনিয়ম হতে পারে। যার প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। তাই হানিমুনে যাওয়ার আগে নিজের স্বাস্থ্যের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন কি না সেটি ভেবে দেখুন। শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে সঙ্গে অবশ্যই ইনহেলার রাখবেন। অন্য কোনো ওষুধ-পথ্যের দরকার হলেও সেগুলোও সঙ্গে রাখুন। হানিমুনে গিয়ে নিজের শরীরের প্রতি কোনোভাবেই উদাসীন থাকা চলবে না।
ঠিকভাবে পরিকল্পনা না করা: হানিমুনের আগে অনেকে তাড়াহুড়ো করে পরিকল্পনা করতেই ভুলে যান। পরিকল্পনা ছাড়া কোনোকিছুই গোছানো হয় না। তাই হানিমুনে যাওয়ার আগে অবশ্যই একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করুন। সেটি করুন দুজনের মতামতের ভিত্তিতে। কোথায় যাবেন, কী খাবেন, কী পরবেন, কোথায় ঘুরবেন ইত্যাদি বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন। সেভাবেই সাজাবেন পরিকল্পনা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানো: অধিকাংশ মানুষ ঘুরতে গেলে চারপাশ দেখার বদলে ক্যামেরায় চোখ রাখতে বা ছবি তুলে কাটিয়ে দিতেই বেশি পছন্দ করে। আবার সেসব ছবি সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপ করে সেখানেই সময় কাটাতে থাকে। হানিমুনে গিয়ে কিন্তু এই ভুল করা চলবে না। সঙ্গীর সঙ্গে নতুন সূচনায় দূরে রাখুন বাকি সবকিছু। এসময় সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানো একেবারেই কমিয়ে দিন বা সম্ভব হলে কয়েকদিন বাদ রাখুন।
সারাক্ষণ ঘরে থাকা: হানিমুনে গিয়ে অনেকে আবার একেবারেই গৃহবন্দি হয়ে থাকে। দুজন দুজনকে সময় দেওয়ার অর্থ এই নয় যে সারাক্ষণ ঘরেই বন্ধ থাকতে হবে। একসঙ্গে ঘুরেফিরে বেড়িয়েও পরস্পরকে চেনা যায়। তাই হানিমুনের সময়টা উপভোগ করার জন্য বাইরেও ঘোরাঘুরি করুন। সারাক্ষণ নিজেকে বন্দি করে রাখবেন না।
খাবারে অনিয়ম: অনেকে ঘোরাঘুরির আনন্দে খাবার খাওয়ার কথাই ভুলে যান। অনেকে আবার খেলেও খান অস্বাস্থ্যকর সব খাবার। হানিমুনে গিয়ে বাইরের খোলা খাবার বা ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলুন। ভালো মানের খাবার সঠিক সময়ে খান। এতে শরীর ভালো থাকবে। পেটে সমস্যা বাঁধে এমন কোনো খাবারই খাবেন না।
ইবাংলা / নাঈম/ ১৬ জানুয়ারি, ২০২২