তামিমদের ঈদ উপহার, জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই

 

বাংলাদেশ দলের কাছ থেকে এর চেয়ে দারুণ ঈদ উপহার আর কী হতে পারত! হারারেতে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) তৃতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সিরিজটা ৩–০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।

জিম্বাবুয়ের মাঠেই জিম্বাবুয়েকে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। দুর্দান্ত জয় দিয়েই ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাইয়ের ম্যাচে তামিম দিয়েছেন সামনে থেকে নেতৃত্ব। করেছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি। ১২ বছর পর জিম্বাবুয়ের মাটিতে সিরিজ তো জিতেছেই, হারারের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রেকর্ড রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে প্রতিপক্ষকে ১৫বার ধবলধোলাই আর বিদেশের মাঠে ছয়বার ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।

হারারে স্পোর্টস ক্লাবের মাঠে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ২৯৯ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন তামিম–লিটন। দুজনের ওপেনিং জুটিতেই আসে ৮৮ রান। ৪৬ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫২তম ফিফটি করেন তামিম। মাধিভেরের বলে আউট হওয়ার আগে লিটন করেন ৩২ রান।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সাকিব ও তামিম দলকে জয়ের কক্ষপথে রাখেন। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে এগোতে থাকেন দুই তারকা ব্যাটসম্যান। এই জুটিতে আসে ৫৯ রান। জঙ্গুয়ের বলে উইকেটকিপার চাকাভার ক্যাচ হওয়ার আগে সাকিব করেছেন ৩০ রানে। যদিও আউটটা নিয়ে তাঁর অসন্তুষ্টি ছিল।

তামিম অবশ্য অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন। স্বচ্ছন্দ ব্যাটিংয়ে এগোনো তামিম সবচেয়ে বেশি রান পেয়েছেন ফ্লিক শটে। মিড উইকেট, ডিপ মিড উইকেট, স্কয়ার লেগ, ফাইন লেগ অঞ্চলে থেকেই রান তুলেছেন ৫৫ শতাংশ। গত কিছুদিনে সাদা বলের ক্রিকেটে তাঁকে যে স্ট্রাইকরেট নিয়ে এত কথা শুনতে হয়েছে, আজ তামিমের ব্যাটিং যেন সব সমালোচনার জবাবই দিল।

৮৭ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তামিম। এটিই তামিমেরসবচেয়ে দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। তাঁর আগের দ্রুততম সেঞ্চুরিটা ছিল ৯৪ বলে, ২০১০ সালে করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি সাকিব আল হাসানের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই সাকিব সেঞ্চুরি করেছিলেন ৬৩ বলে।

ত্রিপানোকে খোঁচা দিয়ে চাকাভার গ্লাভসে ধরা পড়ার আগে তামিম আট চার, তিন ছক্কায় ৯৭ বলে করে গেছেন ১১২ রান। স্ট্রাইকরেট ১১৫.৪৬। তামিম ফিরতেই একটু চাপে পড়ে বাংলাদেশ। পরের বলেই একইভাবে আউট নিজের ২০০তম ওয়ানডে খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ (০)।

তবে চাপটা আর বাড়তে দেননি মোহাম্মদ মিঠুন ও নুরুল হাসান সোহান। আগের ম্যাচের ব্যর্থতা কাটিয়ে আজ বেশ দায়িত্বশীল ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছেন মিঠুন। আর একাদশে সুযোগ পেয়ে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন সোহান। মিঠুন ৩০ রান করে আউট হলে ভাঙে দুজনের ৬৪ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি।

দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি আফিফ হোসেন আর সোহান। ৪৮ ওভারে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তার। ৩৯ বলে অপরাজিত ৪৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন সোহান। আফিফ অপরাজিত ১৭ বলে ২৬ রানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটি যোগ করে ২৮ বলে ৩৪ রান।

এর আগে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। রেজিস চাকাভা, রায়ান বার্ল ও সিকান্দার রাজার ফিফটিতে স্বাগতিকেরা অলআউট ৪৯.৩ ওভারে ২৯৮ রান তুলে। সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজ ৩ টি, মাহমুদউল্লাহ ২টি এবং সাকিব ও তাসকিন ১টি করে উইকেট নেন।

২৯৯ রানের লক্ষ্যটাই পরে সহজ হয়ে গেছে তামিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে। জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করে তামিম ভক্ত–সমর্থকদের জানিয়েছেন ঈদের শুভেচ্ছা, ‘সবাইকে ঈদ মোবারক।’ সঙ্গে জানিয়েছেন, টি–টোয়েন্টি সিরিজ না খেলার সংবাদটাও, ‘দুর্ভাগ্য আমি টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলছি না। পুনর্বাসনপ্রক্রিয়ায় (হাঁটুর চোট) আমার ১০–১২ সপ্তাহ লেগে যাবে।’

ইবাংলা/আরআরসি/ ২০ জুলাই, ২০২১

Contact Us