রাস্তা সংস্কারে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর সীমাহীন দুর্নীতি

আমিনুল ইসলাম

বগুড়ায় শিবগঞ্জ উপজেলাধীন নলডুবি থেকে বুড়িগঞ্জ রাস্তা সংস্কার কাজে প্রকৌশলী সিহাদুলের ঘুষ বানিজ্যের কারণে নিম্নমানের নির্মাণ কাজ চলছে। জানা গেছে স্থানীয় মিঠু ঠিকাদার উপজেলার নলডুবি থেকে বুড়িগঞ্জ রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের ইঠ, বালু, খোয়া ও রড ব্যবহার করছে।

 একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মিঠু ঠিকাদার বেশ কয়েক লাখ টাকা ঘুষ প্রদান করে এলজিইডি শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সিহাদুলকে। শর্ত থাকে যে নির্মাণ কাজের মান নিয়ে কোনো অভিযোগ করা যাবেনা। কিন্তু নিম্নমানের কাজ করার কারণে সিহাদুল ঠিকাদারকে নোটিশ করে।

এতেই ঠিকাদার মিঠু ক্ষেপে যান। এরপর বেশ কিছু দিন কাজ বন্ধ রাখেন। প্রকৌশলীকে সরিয়ে দিতে তদবির করে এলজিইডি প্রধান কার্যালয়ে। উদ্দেশ্য সিহাদুলকে শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে সরিয়ে অন্যত্র বদলি।

এসব বিষয়ে সিহাদুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করেন। তারপর অবশ্য স্বীকার করেন। সিহাদুল বলেন, মিঠু ঠিকাদার আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। বলেছে আমাকে এখান থেকে বদলি করে দুর্গম এলাকায় পাঠাবে।

২০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার প্রশ্ন করলে তিনি অস্বীকার করেন। বলেন, সে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। সিহাদুল আরও বলেন, এসব বিষয়ে কোন ধরণের নিউজ করার প্রয়োজন নেই আপনি বগুড়ায় আসলে দেখা করবেন এবং এক কাপ চায়ের আমন্ত্রণ রইল।

তিনি আরও বলেন, এবিষয়টি স্থানীয় সাংসদ ও আমার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবগত করেছি। গত ১০ ফেব্রুয়ারী নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে ঠিকাদারকে জানানো হয়, সামান্য কিছু পাথর দেয়া হয়েছে ১২মিঃ মিঃ। ৭০% মোটা বালু দেয়া হয়েছে যা ওয়ার্ক অর্ডার বহির্ভূত।

কাজ শেষ হওয়ার সময়সীমা ছিল ৮ মার্চ ২০২১ এখন পর্যন্ত মাত্র ৩০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ডায়ামিটার ১২ মিঃমিঃ এর স্থলে ১০ মিঃমিঃ, বিটুমিন সামান্য পরিমান দেয়াসহ নিম্নমানের বালু, রড, সিমেন্ট দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ চলছে।

ইবাংলা প্রতিবেদকের কাছে সিহাদুল আরও বলেন, নিম্নমানের কাজের প্রশ্নে সতর্কবার্তা দিলে ঠিকাদার মিঠু ও তার লোকজন সাইড ইঞ্জিনিয়ারকে লাঞ্চিত করে। অকথ্য ভাষায় ও অশালিন আচরণ করার অভিযোগও করেছিলেন সিহাদুল। সিডিউল বহির্ভূত নিম্নমানের কার্পেটিং করা হয়েছে, যা কিছু দিন যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে যাবে বলে জানান স্থানীরা।

স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন, সঠিক সময় কাজ সম্পন্ন না করা এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় চলতি বর্ষা মৌসমেই এ রাস্তা খানাখন্দে পতিত হবে। অচিরেই সাধারণ মানুষের চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়বে এই রাস্তাটি।

সূত্র জানায়, কাজ বন্ধ থাকায় পুনরায় ওই ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর মেধ্য মোট অংকের অবৈধ লেনদেনের শর্তে সমঝোতা হয় এরপর আবারও নির্মাণ কাজ শুরু করে। এসব বিষয়ের সত্যতা জানতে ঠিকাদার মিঠুর সঙ্গে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে জানাগেছে, এই মিঠু ঠিকাদারই উপজেলার মোকামতলা- শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ কাজেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এই কাজেও রয়েছে নানা অনিয়ম দুর্নঅতি।

চলবে…

ইবাংলা/ ই/ ২৬ মার্চ, ২০২২

Contact Us