সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অপরাধে র্যাবের সেই আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম স্বাক্ষরিত সারওয়ার আলমকে তিরস্কারসূচক লঘুদণ্ড প্রদান করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
সারওয়ার আলম র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালে ভেজাল ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে মানুষের প্রশংসা লাভ করেন। তার সাফল্যের জন্য ২০১৯ সালের ১২ মে তার মাকে ‘গরবিনী মা’ পদক পরিয়ে দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।২০২০ সালের ৯ নভেম্বর মাসে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয় তাকে।
বিসিএস ২৭তম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডার হিসেবে সারোয়ার আলম সরকারি চাকরিতে যোগ দেন ২০০৮ সালের নভেম্বরে। ২০১৪ সালের ১ জুন সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয় তাকে। সে অনুযায়ী এ পদে প্রায় সাত বছরসহ মোট ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি, যা পদোন্নতির শর্ত পূরণ করে।
গত বছরের ৭ মার্চ প্রশাসনের ৩৩৭ জন সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার। কিন্তু পদোন্নতিবঞ্চিত হন সারওয়ার আলম। এরপর তিনি ওই বছরের ৮ মার্চ ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘চাকরিজীবনে যেসব কর্মকর্তা কর্মচারী অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়েছেন তাদের বেশির ভাগই চাকরিজীবনে পদে পদে বঞ্চিত ও নিগৃহীত হয়েছেন এবং এ দেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটাই অন্যায়’ বলে মন্তব্য করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে সরকার ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করার মাধ্যমে অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ করেছে এবং এতে জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করে ৩০ জুন অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী প্রেরণ করে কৈফিয়ত তলব করা হয়।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো লিখিত বক্তব্য না দেওয়ায় অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সারওয়ার আলমের বিরুদ্ধে তার ফেসবুক আইডিতে যে মন্তব্যের কারণে অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ এবং জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি তার ফেসবুক আইডিতে সে মন্তব্যটি করেছেন মর্মে স্বীকার করেছেন।
তার বিরুদ্ধে আনীত সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩(খ) বিধি মোতাবেক ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে উক্ত বিধিমালার ৪ (২) (ক) বিধি অনুযায়ী ‘তিরস্কার’ সুচক লঘুদণ্ড প্রদান করা হলো।
ইবাংলা/ এসআর / ০৬ মে, ২০২২