শ্রীমঙ্গলে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার স্বামী কর্তৃক এক গৃহবধূকে ঘুমন্ত অবস্থায় শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত গৃহবধূ আকলিমা আক্তার (২৬) উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মাধবপাশা রেলওয়ে কলোনির আবুল কাশেম এর মেয়ে।

ঘটনাটি গতকাল রাতের কোনো এক সময় ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের ছোট বোন ও নিহতের পিতার বরাত দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী পারভেজ মিয়া পলাতক রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান, সোমবার সকাল ৬ টার দিকে নিহত আকলিমার বাবা আমাকে ফোন দিয়ে মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। ছেলে ও মেয়ে তারা দুজনেই সৌদি আরবে থাকতো।

আরও পড়ুন…কাপ্তাই হ্রদে অবৈধ মাছ শিকার বন্ধে নৌ পুলিশের অভিযান

সেখানেই তাদের পরিচয়। এরপর তাদের বিয়ে হয়, বিয়ের পর স্বামীকে রেখে গৃহবধূ আবার কাতারে চলে যায়, এবং ১৮ মাস পরে দেশে ফিরে আসে। বিভিন্ন সময়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকতো।

ইউপি সদস্য আরো বলেন, গতকাল রাতে তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আবারো ঝগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে রুবেল নামের এক ছেলে তাদেরকে মিলিয়ে দেয়। এবং পরবর্তীতে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার স্বামী। এই ঘটনা শোনার পর আমি সাথে সাথে প্রশাসনকে অবহিত করি। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

নিহতের ছোট বোন তাসলিমা আক্তার জানান, আমার বোনের সাথে তার স্বামী পারভেজের ঝগড়া হইছে টাকা নিয়া, সে নেশা খাইয়া আমার বোনের উপর নির্যাতন করতো। আমার বোনের কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিছে তার স্বামী পারভেজ। আমার বোন সেই ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ফেরত চায় পারভেজ এর কাছে।

আরও পড়ুন…নোয়াখালীতে কিশোরীকে ধর্ষণ, ৭০ হাজার টাকায় দফারফা

তখন তার বন্ধু রুবেল আমার বোন আকলিমারে কয় আমি পারভেজরে কইমুনে ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে তোমাকে দেওয়ার জন্য এরপর আমার বোন মেনে নেয় তাদের কথা। তারপর তাদের মধ্যে আবারো ঝগড়া হলে দুজনকে মিলিয়ে দেওয়া হয়।

এসময় পারভেজ আমার বোনের কাছে মাফ চায় তারপর খাওয়া দাওয়া করে রাতে বোন ঘুমিয়ে পরে। সকালে দরজা বন্ধ দেখে ঘরের পিছন দিয়ে ঢুকে আমরা বোনের লাশ বিছানায় পড়ে আছে দেখতে পাই। আমার বোনের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, আমাদের ধারনা গলায় ওড়না পেচিয়ে ও বালিশ চাঁপা দিয়ে হত্যা করছে পারভেজ।

শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) হুমায়ুন কবির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল রাতে স্বামী- স্ত্রী খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে শাশুড়ী নাজমা বেগম দেখতে পায় তাদের ঘরের দরজা বন্ধ তালা দেওয়া।

ঘরের পিছনদিকে রান্না ঘর ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখে স্বামী ঘরে নেই এবং স্ত্রীর মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আমরা গৃহবধূর গলায় আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। আমরা জানতে পেরেছি তারা সৌদিআরবে থাকাকালীন পরিচয় হয়, এরপর তাদের বিয়ে হয়।

দেশে আসার পর স্বামীকে রেখে স্ত্রী আবার কাতার চলে যায়। গত ১৫ জুলাই ওই গৃহবধূ আকলিমা কাতার থেকে দেশে ফিরে আসে। তিনি আরো বলেন, এস আই নুরুল সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ মৃত্যুর বিষয়ে মামলা পক্রিয়াদিন রয়েছে।

ইবাংলা/জেএন/১৮জুলাই,২০২২

Contact Us