দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বলিভদ্রপুর এম,এম দাখিল মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্রী মোছাঃ সুমাইয়া খাতুন (১৬) পার্শ্ববর্তী বড়নগর গ্রামের মোঃ আল কামাল বাবু মিয়ার কন্যা।
যানা যায় সুমাইয়া প্রতিনিয়ত মাদ্রাসায় যাতায়াত করার সময় বলিভদ্রপুর গ্রামের মোঃ তুশার (২২) পিতা মোঃ আঃ কুদ্দুস ও মোঃ মমতাজ (২৩) পিতা মোঃ ইসমাইল হোসেন উক্ত সুমাইয়াকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করতো।
গত ১৩ই জুলাই বুধবার সুমাইয়া একাকী মাদ্রাসা হতে বাড়ি ফেরার সময় আনুমানিক বৈকাল ৩ ঘটিকায় রাস্তায় অভিযুক্ত তুশার ও মমতাজ সুমাইয়ার পথ রোধ করে বিভিন্ন প্রকার কুরুচিপুর্ণ প্রস্তাব দেয় এবং তার শরির স্পর্শ করার চেষ্টা করে, এমতাবস্থায় রাস্তায় দিয়ে মানুষ আসতে দেখে তুশার ও মমতাজ দ্রæত স্থান ত্যাগ করে চলে যায়।
আরও পড়ুন…গাজীপুরে ক্রিকেট খেলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ; ককটেল নিক্ষেপ!
সুমাইয়া তাড়াতাড়ি নিজ বাড়িতে এসে সব ঘটনা তার মা বাবাকে যানায় এবং এর বিহিত না হলে এই মুখ আর কাউকে দেখাবেনা বলে জানিয়ে দেয়। মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে সুমাইয়ার বাবা মাদ্রাসার সুপারিন্ডেন্ট আব্দুস সাত্তার এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বিষয় অবহিত করেন।
মাদ্রাসার সুপারিন্ডেন্ট পরের দিন অফিস সময়ে মাদ্রাসায় আসতে বলেন সুমাইয়ার বাবাকে। সুমাইয়ার বাবা বাবু মিয়া সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকায় মাদ্রাসায় যাইতে দেরি করেন, এবং সুমাইয়ার মা সুমাইয়াকে মাদ্রাসাতে যাইতে বললে, সুমাইয়া মনে করেন তার বাবা এ বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ হয়তো নিবেন না।
তাই ক্ষোভে দুঃখে ও অভিমান করে নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার চেস্টা করেন। তার মা টের পেয়ে চিৎকার করলে আশপাশের বাড়ির লোকজন এসে ঘরের দরজা ভেঙে সুমাইকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ গত ১৭/০৭/২০২২ইং তারিখে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান।
এদিকে সুমাইয়ার বাবা মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট এর নিকট এই ঘটনার বিবরন উল্লেখ্য করে একটি অভিযোগ প্রদান করেন। অভিযোগ পেয়ে মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট মাওঃ আঃ সাত্তার উক্ত অভিযোগ পত্র ফুলবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জমা দেন এবং এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপারিন্টেন্ডেন্ট আঃ সাত্তার আরো বলেন আমি উক্ত অভিযোগ পত্রটি ফুলবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে ফুলবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ সাহেবকে জমা দেই। অভিযোগ পাবার পর দৌলতপুর ইউনিয়ন বিট অফিসার সাব ইন্সপেক্টর আকবর আলি উক্ত এলাকা তদন্তে আসেন।
এদিকে ফুলবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ এর নিকট অভিযোগের বিষয়ে তার গত ২২/০৭/২০২২ ইং তারিখে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। গত ২২শে জুলাই জানা যায় এই বিসয়টি ৪নং বেতদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ধসঢ়; মোঃ আঃ কুদ্দুস স্থানীয়ভাবে শালিসের মাধ্যমে মিমাংসা করার চেষ্টা করছেন।
মোবাইল ফোনে চেয়ারম্যান শাহ্ধসঢ়; মোঃ আঃ কুদ্দুস এর নিকট শালিস ও মিমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি ঐ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের রেষারেষির কারন, আবারও তিনি বলেন, এটি ঐ প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ নিয়ে বিবাদের কারনে সৃষ্ট ঘটনা।
এবং তিনি বলেন বিষয়টি নিয়ে সামাজিক ভাবে শালিসের মাধ্যমে অভিযুক্তদের অবিভাবকগনের নিকট হতে মুচলেকা নিয়ে মিমাংসা করা যায় যাতে পরবর্তীতে যেনো এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এদিকে ২৪শে জুলাই মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট নিকট ফোন দিয়ে বিষয়টির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে যানতে চাইলে তিনি দুঃখের সহিত আক্ষেপ করে বলেন।
আরও পড়ুন…ইবিতে ছাত্রলীগের মাদকবিরোধী মিছিল
আমরা প্রশাসনের নিকট বিচার চেয়েছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সাড়া পাইনি। কাঙ্গাল ও গরিবের বিচার আছে কি? বা তা হবে কিনা জানিনা?। এ বিষয়ে ছাত্রী সুমাইয়ার বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের মেয়েকে অভিযুক্তরা প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
আমরা আমাদের মেয়ের জীবনে বেঁচে থাকা ও স্বাধীনভাবে পড়া লেখা করার নিশ্চয়তা চাই আইন ও প্রশাসনের নিকট। এদিকে আমাদেরকে মিমাংসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে দৌলতপুরের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ বিষয়ে ফুলবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সঙ্গে গত ২৪/০৭/২০২২ইং তারিখে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করাহলে তিনি বলেন,আমি এ বিষয়ে সঠিক ওয়াকিবহাল নয় তবে মাদ্রাসার
সুপারিন্টেনডেন্ট আমার নিকট এসেছিল।
আমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী ইফটিজিংয়ের বিষয়ে স্থানিও ভাবে মিমাংসার পক্ষে নয়, বলে জানিয়ে দিয়েছি। মুলতঃ সব মিলিয়ে একটা ধোঁয়াশাছন্ন বিষয় কোনটি সঠিক, তা সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে উদঘাটন করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক বলে এলাকাবাসির প্রত্যাশা।
ইবাংলা/জেএন/২৫ জুলাই,২০২২