বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, যে কোন ব্যথাই মৃত্যুর কারণ হতে পারে। রাতে পেটে ব্যথা হলে সঠিকভাবে পরীক্ষা না করে গ্যাসের ওষুধ খেয়ে শুয়ে থাকলে মৃত্যুও হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে পেটে ব্যথা নিয়ে আয়োজিত সেন্ট্রাল সেমিনার তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘অনেক কারণেই পেটে ব্যথা হতে পারে। ভোর রাতের ব্যথা মারাত্মক আকার ধারণ করে। মনে রাখতে হবে, ভোর রাতেই ব্যথার মৃৃত্যুর হার বেশী। তাই পেটে ব্যথাকে অবহেলা না করে নিকটস্থ চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে যথাযথ সেবা নিতে হবে।’
আরোও পড়ুন…তারেক কানেকশন : আওয়ামী লীগে ভর করে হাশেম রেজার অস্বাভাবিক উত্থান
সেমিনারে কি-নোট স্পিকার হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. রোকুনুজ্জামান, সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এস.এম. সাঈদ উল আলম, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফজলুল করিম চৌধুরী।
সেমিনারে বলা হয়, পেটের রোগের অন্যতম হচ্ছে পেটে ব্যথা। এই পেটের ব্যথা নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। যার অধিকাংশ কারণ নির্ণয় করা গেলেও প্রায় ৩০ শতাংশ কারণ নির্ণয় করা যায় না। পেটে ব্যথার অন্যতম কারণগুলোর মধ্যে পেপটিক আলসার ডিজিজ, অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ, আইবিএস, পিত্তথলীর প্রদাহ, পিত্তথলী ও পিত্তনালীর ভিতর পাথর, লিভারের প্রদাহ (হেপাটাইটিস) ইত্যাদি কিছু ক্ষেত্রে, পেটে ব্যথা আমাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। যেমন- পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কোলন ও পিত্তথলীর ক্যান্সার।
রোগের ইতিহাস এবং শারীরিক ও ল্যাবরেটোরি পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা সঠিক সময়ের ভিতর পেটে ব্যথার কারণ সম্পর্কে অবগত হতে পারি। কিছু ক্ষেত্রে বুকের ইসিজি, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, এন্ডোসকপি, কোলনস্কপি পরীক্ষাগুলো করা বিশেষ প্রয়োজন হয়। শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের উপসর্গ হিসেবে পেটে ব্যথার অন্যতম যা অনেকাংশই অনির্ণীত থাকে, যেমন হার্টের রোগ। বয়স্ক রোগী, মহিলা ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগীরা এ সমস্যায় বেশী ভোগেন। পেটে ব্যথা উপসর্গ নিয়ে অনেকে চিকিৎসকের কাছে আসেন।
এতে বলা হয়, এসব উপসর্গের মধ্যে এপেন্ডিসাইটিস, পিত্তথলির পাথর, অন্ত্র ফুটো হয়ে যাওয়া, অন্ত্রে প্যাচ লেগে যাওয়া, নারীদের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়ের নালীতে প্যাচ লেগে যাওয়া অন্যতম। যদি কোন রোগীর পেটে ব্যথা সাধারণ ওষুধে না কমে এবং ৬ ঘণ্টার বেশী সময় ধরে থাকে- তাহলে দেরী না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে অথবা কোন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে। সুতরাং পেটে ব্যথাকে অবহেলা আর নয়। পেটে ব্যথা হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিকটস্থ চিকিৎসকের শরাণপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা করলে এই উপসর্গ থেকে দীর্ঘমেয়াদী পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন…সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথকে আওয়ামী লীগের সব পদ থেকে অব্যাহতি
সেমিনারে তিনটি প্রবন্ধের উপর বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক ) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল সাব কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা.বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী।
ইবাংলা/আরএস/১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়েছে.