বাসভবনে সন্ত্রাসী হামলায় হাইতির প্রেসিডেন্ট নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

লাতিন আমেরিকার স্বাধীন দ্বীপ রাষ্ট্র হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভনেল ময়েস রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে তার নিজের বাসভবনে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্ন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ক্লড জোসেফ।

ক্লড জোসেফ বলেছেন একদল অজ্ঞাতপরিচয় সশস্ত্র ব্যক্তি স্থানীয় সময় দিবাগত রাত একটার সময় প্রেসিডেন্টের বাসভবনে আকস্মিকভাবে ঢুকে পড়ে। ফার্স্ট লেডিও হামলায় আহত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। জোসেফ জানিয়েছেন যে ”রাষ্ট্র পরিচালনা অব্যাহত রাখতে সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণের প্রাক্কলে এই ঘটনা ঘটল”।

বুধবার (৭ জুলাই) একটি বিবৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ক্লড জোসেফ এতে বলা হয়, সশস্ত্র একটি দল প্রেসিডেন্ট জোভেনেলের বাড়িতে মাঝরাতে হামলা চালায় এবং তাকে গুলি করে হত্যা করে। হামলায় প্রেসিডেন্টের স্ত্রীও আহত হয়েছেন।

মিস্টার জোসেফ জানিয়েছেন, তিনি দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন এবং পরিস্থিতি সেনাবাহিনী এবং পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। খবরে বলা হচ্ছে, হঠাৎ করে হাইতির রাজধানীতে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।

জোভনেল ময়েজ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। তার পূর্বসূরী মিশেল মার্টেলি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর ৫৩ বছর বয়সী ময়েজ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ২০১৮ সালে নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার পর থেকে প্রেসিডেন্ট জোভনেল নির্বাহী আদেশ জারির মাধ্যমে শাসন চালাচ্ছিলেন।

এই প্রেসিডেন্টের শাসনকাল খুবই সমস্যা জর্জরিত ছিল হাইতি। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও ছিল এবং প্রায়ই সরকারবিরোধী সহিংস বিক্ষোভের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। এ বছরের গোড়াতে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এবং দেশের অন্যান্য শহরে তার পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভও হয়েছে একাধিকবার।

হাইতির বিরোধী দল বলছে প্রেসিডেন্ট ময়েজের ক্ষমতার পাঁচ বছরের মেয়াদকাল ২০২১ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিল। তার পূর্বসূরী মার্টেলি পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন। কিন্তু জোভনেল জোর দিয়ে বলেছিলেন, তিনি যেহেতু ২০১৭ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করেন তাই আরও এক বছর তিনি ক্ষমতায় থাকতে চান।

তার বাড়তি এক বছর ক্ষমতায় থাকা নিয়ে নানা অভিযোগের মধ্যে ছিল নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ। ২০১৫ সালের নির্বাচনী ফলাফল বাতিল করে দিয়ে নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠান দেয়া হয়েছিল, যে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি ।

বিরোধীদল যখন ৭ই ফেব্রুয়ারি তার পদত্যাগের দাবি জানায়, তখন জোভেনেল বলেছিলেন ”তার সরকারকে উৎখাত করার এবং তাকে হত্যা করার জন্য সংঘটিত অভ্যুত্থান” ব্যর্থ হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, স্বৈরতন্ত্র এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে হাইতি আমেরিকার অন্যতম দরিদ্র একটি দেশ হয়ে উঠেছে।

ই-বাংলা/ ইআহা/ ৮ জুলাই, ২০২১

নিহতপ্রেসিডেন্টহাইতিরহামলায়
Comments (0)
Add Comment