মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তার ছেলে কিম আরিস। যুক্তরাজ্যে নিজের বাসা থেকে গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি তিনি এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সূত্র : গার্ডিয়ান
আরিস বলেন, কারাগারের বাইরের কোনো ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে তাকে দেখেননি। জেনেছি তার খেতে সমস্যা হচ্ছে। তার মাড়িতে সমস্যা রয়েছে। সম্ভবত আক্কেল দাঁত নিয়ে তিনি সমস্যায় ভুগছেন। তার বমি হচ্ছে। মাথা ঘোরে। তেমন একটা হাঁটতে পারেন না। কারাগারের ডাক্তাররা তার উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করেছেন। কিন্তু জান্তা সেটার অনুমতি দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন>> শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: মোদি
৭৮ বছর সয়সি সু চিকে বর্তমানে ইয়াঙ্গুনের ইনসিন কারাগারে রাখা হয়েছে। রাজনৈতিক বন্দিদের নির্যাতনের জন্য এই কারাগার বিখ্যাত। সেখানে কারাবাসকালে অনেক রাজনীতিবিদ মারাও গেছেন।
১৯৯১ সালে সু চি যখন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তখন কিম আরিস কিশোর। তিনি তখন মায়ের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।
মায়ের কারাবাসের ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করে আরিস বলেন, ১৯৮৯ সালের পর থেকে আমার মা প্রায় দুই দশক বিভিন্নভাবে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। কিন্তু ইতঃপূর্বে বন্দি করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগের একটা উপায় থাকত। এমনকি মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে দেখাও করতে পারতাম। কিন্তু এখন সেই সব অনুমতি বা সুযোগ একদম বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় প্রায় আড়াই বছর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে নিজেকে কিছুটা অসহায় মনে হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সু চির এই কনিষ্ঠ ছেলে।
গত আগস্টে সু চির কারাদণ্ড কিছুটা কমিয়েছে জান্তা সরকার। বর্তমানে তিনি ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। অর্থাৎ জীবিত থাকলে তাকে ১০৫ বছর বয়স পর্যন্ত কারাগারেই কাটাতে হবে।
জান্তার কারাদণ্ড কমানো লোক দেখানো মন্তব্য করে আরিস বলেন, এটা জান্তার আরেকটা কৌশল। এর মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কিছুটা ইতিবাচক মনোযোগ পেতে চায়।
জান্তার প্রতি আরিসের আবেদন, তার মাকে দ্রুত মুক্ত করে দেওয়া হোক। মুক্তি দেওয়া না হলেও তাকে নিজের ডাক্তারদের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার অন্তত অনুমতি দেওয়া হোক।
আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আরিসের আহ্বান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের ওপর যে নির্মমতা চালাচ্ছে তার নথিবদ্ধ প্রমাণ রয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বশক্তির বেশি দিন চোখ বন্ধ করে রাখা ঠিক হবে না।
ইবাংলা/এসআরএস