চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে ককটেল হামলা!
জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী
নোয়াখালীর চাটখিলে স্থগিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে ককটেল হামলার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাটখিল উপজেলার স্থগিত ৮ নং নোয়াখলা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুরুল হুদার বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো.নুরুল হুদা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হাজী মো.মানিকের একাধিক অনুসারীর নেতৃত্বে আমার বসত ঘরের দরজার সামনে ৩/৪ টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনো হয়। ওই সময় এলাকার লোকজন দাওয়া দিলে দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এসময় ঘরের সামনে থেকে একটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে এবং থানায় যেতে বলে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার ১৭ ডিসেম্বর রাতে ৪-৬জন দূর্বৃত্ত ২টি মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে। এ সময় তারা আমাকে খোঁজ করে আমার ছেলের কাছে পানি খেতে চায়। পানি খেয়ে তারা আমার ছেলেকে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় নাহারখিল এলাকার দূর্বৃত্তরা আমার ছেলেকে বলে তোর বাবা না এলে তোকে ছেড়ে দেওয়া হবেনা। ওই তারা আমার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য আমার ছেলেকে এবং আমাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে রাত ১টার দিকে আমার ছেলেকে ছেড়ে দেয় তারা।
৮নং নোয়াখলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হাজী মো.মানিক বলেন, আমার কোন অনুসারী এসব ঘটনার সাথে জড়িত নেই। এসব অভিযাগ বানোয়াট ও পুরোপুরি মিথ্যা।
চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত নেই। থানায় কেউ এ ঘটনায় লিখিত কোন অভিযোগ করেনি।
উল্লেখ্য, আগামী ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠেয় পঞ্চম ধাপের নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার ৮নং নোয়াখলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উচ্চ আদালতের নির্দেশে ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে আদালতের এ সংক্রান্ত একটি আদেশনামা নোয়াখালী সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে পৌঁছেছে।
আদালতের আদেশ নামায় বলা হয় চাটখিল উপজেলার ৮নং নোয়াখলা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিল সোহাগ নির্বাচন স্থগিত চেয়ে উচ্চ আদালতে একটি আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে গত ৫ ডিসেম্বর শুনানি শেষে সুপ্রিম কোটের হাই কোট বিভাগের বিচারপতি মামনুন রহমান এবং দিলিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ব্যাঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর ফলে পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারী নোয়াখলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আইনগত বাধ্য বাধকতার কারনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। জানাযায়, ২০১৬ সালে অনুষ্টিত চাটখিল উপজেলার ৮ নং নোয়াখলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী মোঃ শাহজাহান রানা বাদী হয়ে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি এখনো চলমান রয়েছে। ওই মামলা দায়েরের কারনে ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী নৌকার প্রার্থী ইব্রাহিম খলিল সোহাগের চেয়ারম্যান হিসাবে গেজেট, শপথ ও মাসিক সম্মানী ভাতা পান নি।
কিন্তু নির্বাচন কমিশন মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ার আগেই এবং চেয়ারম্যান হিসাবে তার গেজেট, শপথ ও ৫ বছরের সম্মানী ভাতা না দিয়েই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। এসকল কারণ দেখিয়ে নির্বাচন স্থগতি চেয়ে ইব্রাহিম খলিল সোহাগ চলতি মাসের শুরুতে উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন।
চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিল সোহাগ বলেন ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যাবধানে হেরে যায়। নির্বাচরে পরাজয়ের পর বিএনপির যুগ্ন মহা-সচিব ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন পরাজিত বিএনপির প্রার্থী মো.শাহজাহান রানাকে দিয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের কারনে তার চেয়ারম্যান হিসাবে গেজেট এবং শপথ গ্রহন হয়নি এবং তার মাসিক সম্মানী ভাতাও পাননি। তাই তিনি এব্যাপারে আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত আগামী ৬ মাসের জন্য নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছেন।
ইবাংলা / টিআর/ ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১