শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম খুবই জরুরি। চিকিৎসকরাও প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু ব্যস্ততম জীবনে কাজের চাপে ঘুমের ঘাটতি থেকে যায়। যা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
তাছাড়া চলতি করোনা-স্ফীতির কারণে আবারো কিছু কিছু অফিস ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে ফের বাড়ি থেকে কাজ করছেন অনেকেই। বাড়ি থেকে অফিস করার যেটি প্রধান সমস্যা তা হলো বাড়ি এবং অফিস একসঙ্গে সামলানো। এক্ষেত্রে কর্মজীবি নারীদের উপর বেশি চাপ পড়ে। এত কিছু সামলাতে গিয়ে ব্যঘাত ঘটে ঘুমের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরুষদের তুলনায় নারীদের ঘুমের প্রয়োজন বেশি। সোসাইটি ফর উইমেন’স হেলথ রিসার্চের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘুমের সময় নারী এবং পুরুষের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তন লক্ষণীয়। ন্যাশনাল লাইব্রেরী অফ মেডিসিন বলছে, প্রায় ৪০ শতাংশ নারী অনিদ্রায় ভুগে থাকেন।
পুরুষদের তুলনায় নারীদের ঘুমের প্রয়োজন বেশি কেন?
প্রাথমিক কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে জৈবিক গঠন অনুসারে পুরুষ এবং নারীদের ঘুমের প্রয়োজনীয়তার সামান্য পরিবর্তন থাকতে পারে। এছাড়া গবেষণায় বলা হচ্ছে যে পুরুষদের তুলনায় নারীদের ঘুম অনেক বেশি সজাগ। তুলনায় পুরুষদের মধ্যে গভীর ঘুমের প্রবণতা আছে। নারীদের ঘুম খুব পাতলা হয়। ফলে সময় পেলেও বিভিন্ন কারণে ভেঙে যায়। অনেক নারীরা যেহেতু ঘর এবং বাইরে দুটোই সামলান ফলে একটা মানসিক চাপ সব সময়ে কাজ করে তাঁদের মধ্যে। নিশ্চিন্তে ঘুমানোর সুযোগ কম থাকে। এছাড়াও হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা, মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, ব্যক্তিগত জীবনযাপন ও কর্মক্ষমতা বজায়রাখতেও নারীদের ঘুমের প্রয়োজন বেশি।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে অনিদ্রায় ভোগা নারীরা উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, মানসিক বিষণ্ণতার মতো সমস্যায় পুরুষদের তুলনায় বেশি ভোগেন। যারা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে আক্রান্ত তাদের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম খুবই প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের ঘাটতি সরাসরি শরীরে এলএইচ হরমোনের নিঃসরণকে প্রভাবিত করে। এর ফলে গর্ভধারণেও অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুমানোর জন্য নারীরা কী কী করবেন
>> রাত ১০টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। সকাল ৭টায় উঠুন।
>> রাতে শোয়ার আগে কফি, চা, নিকোটিন এড়িয়ে চলুন।
>> রাতে হালকা খাবার খান। শোয়ার আগে হাঁটাচলা করে নিন।
>> ঘুমানোর আগে গরম জলে এক বার গোসল করে নিতে পারেন।
ইবাংলা / নাঈম/ ২৪ জানুয়ারি, ২০২২