পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(পাবিপ্রবি) এর সর্বোচ্চ ৩ টি প্রশাসনিক পদ শূন্য হয়ে পড়েছে।সম্প্রতি গত ৬ মার্চ,২০২২ইং মেয়াদ শেষ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর।
এদিকে উপ-উপাচার্য ড. আনোয়ারুল ইসলামের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর এবং ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. আনোয়ার খসরু পারভেজ এর মেয়াদ শেষ হলেও এই দুটি পদও বর্তমানে শূন্য রয়েছে। উক্ত পদ তিনটি ফাঁকা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা অনেক প্রশাসনিক ও আর্থিক স্থবিরতার সম্মুখীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য না থাকায় এবং উপাচার্যের পদ শূন্য হয়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এবং প্রশাসনিক কাজে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরী হতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের সেশনজটের বড় একটা আশঙ্কা তৈরী হয়েছে । পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ অফিসের কর্মকর্তা তাওহীদা খানম জানান-“বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন সেমিস্টারের আনুমানিক ২৫টি রেজাল্ট আটকে আছে, যে সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে।
মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের স্বাক্ষর হয়ে গেলেই স্ব স্ব বিভাগ রেজাল্ট দিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াতে স্ব স্ব বিভাগগুলো রেজাল্ট প্রকাশ করতে পারছে না।” এছাড়া উপাচার্য না থাকায় সমস্যা তৈরী হয়েছে অর্থ ও হিসাব দপ্তরেও।
অর্থ ও হিসাব দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ শাহান শাহ দৈনিক পাবনার চেতনাকে জানান-“বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেজারার স্যারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আর্থিক বিষয়গুলো মাননীয় উপাচার্য মহোদয় দেখভাল করতেন।
কিন্তু মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়গুলো দেখভাল করার মত আর কেউ নেই। ফলে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের কার্যক্রম এখন স্থবির হয়ে আছে।”
এই কর্মকর্তা আরও বলেন-“এই মাসের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের নিয়োগ অথবা ট্রেজারার স্যারের নিয়োগ না হলে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন বোনাস সব আটকে যাবে। এই কারণে অতিদ্রুত মাননীয় উপাচার্য মহোদয় অথবা ট্রেজারার স্যারের নিয়োগ হওয়া খুবই জরুরি ।”
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের ১৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ২৩ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসে তালা ঝুলছে। এতে করে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ আটকে আছে। রেজিস্ট্রার অফিসের সূত্রে জানা যায় টানা ২৩ দিন রেজিস্ট্রার অফিস বন্ধ থাকাতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে সমস্যা তৈরী হয়েছে।
অফিসার্স এসোশিয়েশনের সভাপতি হারুনুর রশিদ জানান-“আমাদের দাবি আদায় হওয়া না পর্যন্ত আমরা রেজিস্ট্রার অফিসের তালা খোলা সম্ভব না। আমরা আশা করছি, নতুন উপাচার্য মহোদয় এসে আমাদের ১৭ দফা দাবি মেনে নিবেন।”
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্মকে (চলতি দায়িত্ব) প্রশাসনিক ভবনে না পাওয়া গেলে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান,” প্রশাসনিক কাজে বর্তমানে আমি ঢাকায় আছি।বিশ্ববিদ্যালয় এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে এই কথা স্বীকার করলেও চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি ফোনে কোন কথা বলতে রাজি হননি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক ড. সমীরণ কুমার সাহা বলেন-“শিক্ষার্থীদের অনেকগুলো রেজাল্ট আটকে আছে এটা ঘটনা সত্য। যারা অনার্সের ফাইনাল এবং মাস্টার্সের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করেছে তাদের রেজাল্ট প্রকাশ হওয়া অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে । রেজাল্টের জন্য শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন চাকরির আবেদন করতে পারছে না।
অন্যান্য সেমিস্টারের রেজাল্টগুলো হওয়াও প্রয়োজন।তবে চলমান পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো কন্ট্রোলার অফিসের সাথে যোগাযোগ করে পরীক্ষা নিতে পারেন বলে আমার জানা আছে। তবে অবস্থা যাই হোক মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের নিয়োগ আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
ইবাংলা/ জেএন/ ২১ মার্চ, ২০২২